আমার কাজিন গ্যাং USA থাকে , যারা সবাই ওখানের সিটিজেন। একটা সময় যখন বড় হয়েছি সবার সাথে খুব ভালো বন্ধুত্বের আদরের সম্পর্ক ছিল। যত আদর ই থাকে ভিসা না থাকলে যাওয়া যাবে না বাস্তবতা টা এরকম। ফ্যামিলি নিয়ে ঘুরতে যাবো অনেক বার প্ল্যান করার পরে ও যাওয়া হয় না। এবার চিন্তা করলাম আমি একা ই যাই ভিসার জন্য এপলাই করি। যখন করলাম এত সহজে ভিসা পেলাম যা কল্পনার বাইরে। ভিসা অফিসের অভিগ্যতা টা ও একটু শেয়ার করি। যখন ইন্টারভিউ সময় আসলো আমি খুব স্বাভাবিক ছিলাম। কিছু ডকুমেন্স সাথে রাখলাম। দেখলাম বিশাল লম্বা লাইন এ অনেক দেশের মানুষ দাঁড়িয়ে। বায়োমেট্রিক হওয়ার পরে নাম্বার পেলাম। ওপেন কাউন্টারে বসে সবার ইন্টারভিউ দেখছিলাম। নোটিশ করলাম সবার থেকে পাসপোর্ট নিচ্ছে না। একটু শঙ্কা হলো , এই ভাবে ওপেন ইন্টারভিউ। যাই হোক সবাই ভিসার জন্য ই অপেক্ষা করছে। আমার সময় আসলো……….একজন মহিলা ছিল খুব স্বাভাবিক কিছু জিগ্যেস করে আমাকে কংগ্রাচুলেশন বলে ট্রাভেল এর প্রিপারেশন নিতে বললো, পাসপোর্ট কোথা থেকে কলেক্ট করবো বলে দিলো ।
আমি খুব একটা জাম্প দিলাম মনে মনে। মনে হচ্ছিলো VIP ট্রিটমেন্ট পেলাম। ৩ দিন পরে পাসপোর্ট হাতে পেলাম ভিসা সহ।
যাওয়ার প্ল্যান বানাতে দেরি হলো l তার মাঝে আমরা ৩ বোন মিলে একসাথে ৩ দেশ ঘুরার প্ল্যান বানালাম।
নেপাল , মালদ্বীপস আর শ্রীলংকা কিন্তু আমরা মালদ্বীপস আর শ্রীলংকা ঘুরে ই ট্রাভেল অ্যাডভেঞ্চার ট্রিপ শেষ করলাম। ওখান থেকে ফিরে কিছুটা ক্লান্ত ও ছিলাম একটু সময় নিয়ে ২৯ নভেম্বর টিকেট কন্ফার্ম করলাম।
আমি একা ই ট্রাভেল করছি l বাসায় সব ব্যাস্ত মানুষ রেখে গেলাম l একজন স্টুডেন্ট আর দুইজন কর্ম জীবী। জীবনের জার্নি তে কারো জন্য অপেক্ষায় থাকলে সঠিক সময়ে হয় না l অনেক সময় হয় ই না l অনেক ইচ্ছা অপূর্ণ রয়ে যায়। আমি একা ঘুরে অভস্থ। অনেক সময় নিজের কাজের জন্য ও যাওয়া হয়।
ভ্রমণের সময় আমরা সবসময় সাশ্রয়ী এবং স্যাছন্দ এই দুই দিক খেয়াল রাখি। আমি আগে ও কয়েকবার তুর্কিস এয়ার লাইন এ গেছি এবার ও তুর্কিস এয়ার লাইন এ টিকেট বুক করেছি।
দোহা থেকে ইস্তানবুল ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট ২ ঘন্টা অপেক্ষায় পরে ইস্তানবুল থেকে নিউ ইয়র্ক জন এফ কেনেডি এয়ারপোর্ট এর যাত্রা শুরু হলো।
জীবনের জার্নি টা এই USA জার্নি র মতো লম্বা সফর l পাশের সিটের প্যাসেঞ্জের ভালো হলে ভালো সময় যায় .. ফুল এঞ্জয়েবলে কখন শেষ হবে বোঝা ই যাবে না l পার্টনারশীপ ভালো না হলে মশার কামড়ের মতো ফুল টাইম যন্ত্রনা… প্রব্লেম বুঝলেও কিছু করার নেই.. বেশির ভাগ ক্ষেত্রে l একা জার্নি.. পাশে কেউ ছাড়া ও এঞ্জয়েবল নিজের মতো ভালো থাকা ।
আমার উইন্ডো সীটের কনফার্মেশন, বসে ভাবছি .. পাশের সিটে unwanted / কেউ না থাকে l Possible? না ….
আহা.. ২ ফ্রেন্ড এসে বসেছে ..করার কিছু নেই l আমি অসহায় হয়ে অল্টারনেটিভ খুজছি… সবার বসা হয়ে গেলে দেখি সামনে ২ টা সিট্ খালি উইন্ডো সিট্ ও তার পাশের টা l পাশের যাত্রী কে অনুরোদে জিগ্যেস করলাম বসবে কিনা সামনে ,বলে না, “আমি আমার ফ্রেন্ড এর সাথে ই বসবো” l ওকে .. আমি ই উঠে গেলাম নিজের কমফোর্ট এর জন্য l middle সিট্ খালি থাকছে l কর্নার সিট এ এক অদ্ভুত ড্রেস পড়া ভদ্র লোক বসা , চেহারা সুদানীদের মতো but জাস্ট লাইক স্ট্যাচু.. ঘুম.. খাওয়া.. ঘুম l প্রব্লেম একবার ও ওয়াশরুম এ যেতে পারলাম না l but আমি পুরো দুই সিট্ নিয়ে অনেক কমফোর্টেবল লং জার্নি কাটালাম l সামনে সিট এ একজোড়া মানিকজোড়া cupple খুব পিসফুল ভ্রমণ করছে .. খুব caring partner .
পিছনে.. ফ্রেন্ড যুগল ফুল টাইম এঞ্জয়েবল কনভার্সেশন হি হি …হা হা.. ফুল টাইম .. দেখে মনে হচ্ছে তাদের একটা আলাদা জগৎ l আমার ছটি (young sister)সাথে থাকলে আমার জার্নি ও এরকম যায় l জীবনের অনেক জার্নি তে আমরা এরকম এনজয় করেছি একটা সময় destination চেঞ্জ হয়ে যায়..l.
তারপর আমার বেস্ট ফ্রেন্ড কে খুব মনে হচ্ছে.. এরকম একটা লম্বা জার্নি ফ্রেন্ড থাকলে ফুল টাইম কমফোর্টেবল এঞ্জয়েবল যায় l একদিন আমরা একসাথে এরকম জার্নি তে যাবো … মনকে এই স্বপ্ন দিয়ে গেলাম ..
আমি অনেক বার শুনেছি যে মহিলারা ২ জন বা ৩ জন হলে কথা থামে না আজকে এই টা পিছনে ফ্রেন্ড যুগলের জন্য বললেও ঠিক ছিল l
যাই হোক ঘুম স্বপ্ন আর লিখতে লিখতে আমার একলা সফর ভালো ই কাটালাম l
N.Naher